মে দিবসের সন্ধ্যায় প্রচার সেরে ফেরার পথে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের ধারে প্রহৃত হলেন ব্যারাকপুরের কংগ্রেস প্রার্থী সম্রাট তপাদার। গুরুতর আহত কংগ্রেস প্রার্থীকে ভর্তি করা হয় ব্যারাকপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে। তাঁর বাঁ হাত ভেঙেছে, বুকেও আঘাত লেগেছে বলে জানিয়েছেন চিকিত্সকেরা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রচার সেরে জগদ্দল থানার পলতাপাড়া এলাকায় রাস্তার ধারে গাড়ি থেকে নামেন সম্রাটবাবু। ওই সময় দু’টি মোটরবাইক এসে দাঁড়ায় তাঁর পিছনে। চালকের পিছনে বসা দুই আরোহী নেমে তাঁকে বেপরোয়া মারতে শুরু করে। কিছুদিন আগেই বাইপাস অপারেশন হয়েছে সম্রাটবাবুর। সম্রাটবাবুর অভিযোগ, সেই জায়গাতেই রিভলভারের বাঁট দিয়ে মারায় অচৈতন্য হয়ে মাটিতে পড়ে যান তিনি। তারপরেও এলোপাথাড়ি কিল, ঘুঁষি মারতে থাকে দুষ্কৃতীরা। এ দিকে তাঁর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষী এবং গাড়ির চালক প্রথমে এই ঘটনায় হকচকিয়ে গেলেও বাধা দিতে দৌড়ে গেলে সম্রাটবাবুকে গুলি করার হুমকি দেয় দুষ্কৃতীরা। এরপর মোটরবাইকে চেপে ব্যারাকপুরের দিকে পালিয়ে যায় তারা। রাতেই ব্যারাকপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয় তাঁকে। শুক্রবার সকালে ঘটনার বিবরণ দিয়ে সম্রাটবাবু বলেন, ‘‘কাউগাছিতে সভার পরেই সম্ভবত আমার পিছু নেওয়া হয়। একা পেয়ে আক্রমণ করেছে। এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার কথা কখনও ভাবিনি। তাই নিরাপত্তারক্ষী থেকেও ওদের মোকাবিলা করা যায়নি। আমাকে আহত করে, ভয় দেখিয়ে যারা ভোট কাড়তে চাইছে তারা কাদের জন্য রাজনীতি করছেন? সাধারণ মানুষ না দুষ্কৃতীদের জন্য? পুলিশ প্রথমে গুরুত্ব দিতে চায়নি। নির্বাচন কমিশনকে সব জানিয়েছি।’’
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ এই ঘটনার পরে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করেন কংগ্রেস কর্মীরা। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে শুক্রবার কালা দিবস পালনের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। জেলা ও প্রদেশ কংগ্রেসের নেতারা এ দিন আহত সম্রাটবাবুর সঙ্গে হাসপাতালে দেখা করতে যান। অন্য দিকে, ব্যারাকপুরের সিপিএম প্রার্থী সুভাষিণী আলিও শুক্রবার সকালে সম্রাটের সঙ্গে দেখা করেন। সুভাষিণীদেবী বলেন, ‘‘এই ঘটনা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, এখানে গণতন্ত্র নেই। প্রশাসনও নেই। ১২মে’র আগে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে তৃণমূল।’’ কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্যও তৃণমূলের দিকেই অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছেন। ঘটনার নিন্দা করে তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় এটা ব্যক্তিগত শত্রুতার জের। দলের উত্তর ২৪পরগণা জেলা পর্যবেক্ষক তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘সম্রাটকে মারার ঘটনার আমরা নিন্দা করছি। কিন্তু এটা রাজনৈতিক কারণে ঘটেনি। এখন হারার ভয়ে কংগ্রেস আর সিপিএম এটাকে নিয়ে বাজার গরম করতে চাইছে। আসল ঘটনা হল, পাওনাদারদের হাতে মার খেয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী। তদন্ত করলেই সব প্রমাণ হবে।’’
0 comments:
Post a Comment
Read more at WWW.BANGLARMUKHONLINE.TK